নিউজ ডেস্ক, কলকাতাঃ- রথযাত্রা মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের তীব্র ভৎসনার মুখে রাজ্য সরকার
“এত দ্রুত পুলিশের পক্ষে রথযাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়” এই অজুহাত দেখিয়েই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর সিঙ্গল বেঞ্চে বিজেপির রথযাত্রায় স্থগিতাদেশ চায় রাজ্য সরকার । সেই যুক্তিকেই মান্যতা দিয়ে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী রথযাত্রায় স্থগিতাদেশ জারি করে, তিনি আগামী ৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন স্থির করেন। এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারই বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দাখিল করে । শুক্রবার দিনভর শুনানির পর বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চ, তপোব্রত চক্রবর্তীর রায়ের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন এবং সিঙ্গল বেঞ্চের স্থগিতাদেশকে খারিজ করেন ।
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার পাশাপাশি আদালতকে জানানো হয়, তাঁরা রথযাত্রার অনুমতি চেয়ে ২৯ অক্টোবর থেকে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত বারে বারে প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন পর্যায়ে চিঠি দিয়েছেন, কিন্তু তা সত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়নি বিজেপির সঙ্গে । তাই ৯ জানুয়ারি যদি শুনানি হয়, তবে প্রস্তাবিত রথযাত্রা অনুষ্ঠানের তিন-চতুর্থাংশ হয়ে যাওয়ার কথা। বিজেপির আইনজীবীদের দেওয়া এই তথ্যের ভিত্তিতে ডিভিশন বেঞ্চ অ্যাডভোকেট জেনারেলকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন “সময় থাকতে যদি প্রশাসন বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনা করত তাহলে কি এই পরিস্থিতির উদ্ভব হত” ? সেইসাথে তিনি আরও বলেন “প্রশাসন যদি এ রকম বসে থাকে তাহলে তা অত্যন্ত বিস্ময়কর নীরবতা” । সরকার এবং বিজেপির মধ্যে ওই যোগাযোগের অভাব দূর করে সমন্বয় বাড়াতে রাজ্য প্রশাসনের তিন শীর্ষকর্তা— মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে বুধবারের মধ্যে বিজেপির তিন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার । সেই বৈঠকে গোটা কর্মসূচি এবং সেই সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনা করে আগামী শুক্রবারের মধ্যে আদালতকে চূড়ান্ত রূপরেখা জানাতে হবে সরকারের ।
ডিভিশন বেঞ্চে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের রায় শুনে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন,“এই রায় ভারতের আইনি ব্যবস্থার জয়, গণতন্ত্রের জয়, সর্বোপরি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জয়।”