নিউজ ডেস্ক, কলকাতাঃ- যৌথ সামরিক মহড়ায় ভারত ও আমেরিকার বায়ুসেনা, ঘুম উড়ল লাল চীনের ।
পশ্চিমবঙ্গের আকাশে আগামী ৩ ডিসেম্বর থেকে টানা ১২ দিন ধরে ভারতীয় ও মার্কিন বিমানবাহিনীর দাপট নিঃসন্দেহে রক্তচাপ বাড়াতে চলেছে চিনের । ৩ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে ভারত এবং আমেরিকার বায়ুসেনার যৌথ মহড়া ‘কোপ ইন্ডিয়া ২০১৯’ চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পশ্চিমবঙ্গের পানাগড় এবং কলাইকুন্ডা বিমানঘাঁটি, সড়কপথে চীনের সাথে যাদের দূরত্ব মাত্র ৬৮৮ এবং ৮২৪ কিলোমিটার । ভারতীয় বায়ুসেনার মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানগুলির গতিবেগ ঘণ্টায় ২৪০০ কিলোমিটার আর সুখোই-৩০ এমকেআই উড়তে পারে ঘণ্টায় ২১০০ কিলোমিটার বেগে ফলে চীনের সাথে আকাশপথে দূরত্ব দাঁড়াচ্ছে মাত্র ১৫/২০ মিনিট । অর্থাৎ চোখের পলকেই ভারতীয় বায়ু সেনা পৌঁছে যাবে ভারত-চিন সীমান্তের নাথুলায় । তাই ভারতীয় ও মার্কিন বিমানবাহিনীর যৌথ সামরিক মহড়ার ঘুম উড়িয়ে লাল চীনের তীক্ষ্ণ নজর এখন পানাগড় এবং কলাইকুন্ডা বিমানঘাঁটির দিকে ।
ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুন্ডা এবং পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়— এই দুই বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নামতে শুরু করে দিয়েছে মার্কিন এয়ার ফোর্স। মহড়ায় অংশ নেওয়ার জন্য জাপানের কাদেনা বিমানঘাঁটি থেকে ১৫টি মার্কিন যুদ্ধবিমান ও মার্কিন বায়ুসেনার ইলিনয় এয়ার ন্যাশনাল গার্ডের ১৮২ডি এয়ারলিফ্ট উইং পৌঁছচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। উল্লেখ্য কলাইকুন্ডা বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটদের অ্যাডভান্স ট্রেনিং হয়। কলাইকুন্ডার প্রশিক্ষণে উতরে যাওয়ার পরেই একজন পাইলট ফাইটার স্কোয়াড্রনে জায়গা পান। তার আগে পান না। তাই এমন একটি বিমানঘাঁটি থেকে ভারত-মার্কিন যৌথ মহড়া নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিন এবং ভারতের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে যে রকম টানাপড়েন চলছে, তার প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের মতো এলাকায় ভারত-মার্কিন যৌথ মহড়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দুই বায়ুসেনার মধ্যে সহযোগিতা ও সংযোগ বৃদ্ধি, পরস্পরের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কৌশল শেখা এবং বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই মহড়ার আয়োজন ।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা ভাল, পানাগড়ের এয়ার ফোর্স স্টেশন হল ভারতীয় বায়ুসেনার একটি উল্লেখযোগ্য বিমানঘাঁটি, এখানেই রয়েছে ‘সি ১৩০ জে সুপার হারকিউলিস’ বিমান । সেইসাথে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর অনুসারে ‘১৭ মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর’ নামে যে এলিট ফোর্স তৈরি করছে ভারত, সেই বাহিনীর একটি অংশকেও পানাগড়ে রাখা হতে চলেছে । বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিটি দেশের কিছু কিছু এমন জায়গা থাকে, যেখানে দেশ তার সবথেকে মোক্ষম অস্ত্রটি লুকিয়ে রাখে , তাই চিন সীমান্তের আরও অনেক কাছে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার হাসিমারা ও অসমের ছাবুয়া ভারতের ফাইটার এয়ারবেস থাকলেও পানাগড় ও কলাইকুণ্ডা হল ভারতীয় বিমান বাহিনীর গোপন সিন্দুক ।
ফলে, এই দুই বিমানঘাঁটিতে মার্কিন বাহিনীকে নিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার যৌথ মহড়া সবসময়েই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সেইসাথে এটিযে চিনের চিন্তার কারণ হতে বাধ্য, তা আর বোঝার অবকাশ রাখে না ।