গত বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি এবং আমাজনের মালিক জেফ বেজোস জীবন সঙ্গি ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে নিজের ২৫ বছরের বৈবাহিক জীবনের বিচ্ছেদের কথা জানান। ঘটনাক্রমে এই বিবাহ বিচ্ছেদ-ই হয়ে দাঁড়াচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে দামি বিবাহ বিচ্ছেদ। এখনও অব্দি যা হিসেব তাতে নিজের প্রাক্তন স্ত্রীকে আনুমানিক ৬০-৭০ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৪.২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি জেফকে দিতে হবে। খোরপোশ বাবদ এত বিপুল পরিমাণ টাকা দেওয়ার নজির এখনও পাওয়া যায়নি পৃথিবীর ইতিহাসে। এই সম্পত্তি ভাগ নিজেরাই বোঝাপড়া করে নেবেন, নাকি মার্কিন আদালতের মাধ্যমে করা হবে এখনও স্পষ্ট হয় নি। গত ২০১৭ সালেই পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি নির্বাচিত হয়েছিলেন আমাজনের মালিক জেফ বেজোস। বর্তমানে তাঁর সম্পত্তির পরিমান ১৩৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি যা ভারতীয় মুদ্রায় ৯.৬ লক্ষ কোটি টাকারও অধিক।
যে কারণে এই ডিভোর্সকে এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর সব থেকে দামি বিবাহ বিচ্ছেদ বলা হচ্ছ্ তা হল বেজোসের এই বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে বিপুল ধনরাশির প্রায় অর্ধেক পরিমাণ টাকা তাঁকে দিতে হবে সঙ্গী ম্যাকেঞ্জিরকে।সেই কারণে এই ডিভোর্স এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সব থেকে দামি বিবাহ বিচ্ছেদ। ২৫ বছর আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন জেফ এবং ম্যাকেঞ্জি। ঠিক পঁচিশ বছর আগে ১৯৯৪ সালেই আমাজন নামে অনলাইন-রিটেল সংস্থা তৈরি করেছিলেন জেফ। আবার নিজের অনলাইন-রিটেল ব্যাবসার এবং বিয়ের পঁচিশতম পূর্তি বছরেই মাইক্রোসফট এবং অ্যাপলকে হারিয়ে পৃথিবীর ধনীতম কোম্পানি হিসেবে উঠে আসে আমাজন। অর্থাৎ, যে সময়কালে ধনকুবের হয়ে উঠছেন জেফ বেজোস, সেই সময় একসঙ্গেই ছিলেন এবং ম্যাকেঞ্জি জেফ ।
এক যৌথ টুইট বার্তায় নিজেদের বিচ্ছেদের কথা জানিয়েছেন ম্যাকেঞ্জি এবং জেফ । টুইট বার্তায় তাঁরা বলেছেন, ‘দীর্ঘ দিনের ভালবাসা এবং বিরহের পর আমরা সরকারি ভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা খুব ভাগ্যবান বলেই একে অন্যকে পেয়েছি। সম্পর্কের প্রতিটা বছরের জন্য আমরা একে অন্যের কাছে কৃতজ্ঞ। খুবই সুখের ছিল আমাদের দাম্পত্য জীবন ।খুবই উজ্জ্বল হবে আমাদের ভবিষ্যৎ। । সম্পর্কের পাটি গনিত বদলে গেলেও আমরা বাকি জীবন কাটাব পরস্পরের বন্ধু হয়ে ।
ম্যাকেঞ্জির আইনমাফিক অংশীদারিত্ব আছে জেফের অর্জিত সম্পত্তিতে এবং সেই সম্পত্তি সমান দু’ভাগে ভাগ হবে, এমনই মত আইনজীবীদের। কারণ বেজোস দম্পতি গত ২৫ বছরেই এই ধনসাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, ২৫ বছর ধরে সেই সাম্রাজ্য গড়ে তোলার পিছনে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে ম্যাকেঞ্জি ও বেজোসে দু-জনেরই । তা ছাডাও তাদের ওয়াশিংটনের বাড়িও যৌথ সম্পত্তি হিসেবেই নথিভূক্ত রয়েছে । ওয়াশিংটনের নিয়ম অনুযায়ী নিজেরা বোঝাপড়া না করলে বিবাহিত সম্পর্কে থাকা অবস্থায় কোনও দম্পতি যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে, তার উপর অধিকার স্বামী ও স্ত্রী, দু’জনেরই।